অন্তু দাস (হৃদয়), নির্বাহী সম্পাদক :
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় মাদক ও অশ্লীল নৃত্যের আসর বসানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগে হযরত শাহ্ সুফী ফালু চান চিশতী (রহঃ) মাজার শরীফে ফাইলা পাগলার (ফালু চান) মেলা বন্ধ ঘোষণা করেছে সখীপুর উপজেলা প্রশাসন।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে সখীপুর উপজেলার দাড়িয়াপুরে অবস্থিত ফাইলা পাগলার মাজার প্রাঙ্গণে যৌথ বাহিনীর অভিযান শেষে মেলা বন্ধের এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ সময় অভিযানে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনী, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এটিএম ফজলে রাব্বি, সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকেলে ফাইলা পাগলার মেলায় যৌথ বাহিনী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ব্যবসায়ী ও আগত দর্শনার্থীদের মেলাস্থল ত্যাগ করতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
পরে দোকানপাট সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের দুই ঘণ্টা সময় দেয় যৌথ বাহিনী।
জানা গেছে, ঐতিহ্যবাহী ফাইলা পাগলার মেলা প্রায় ৭৫ বছর ধরে উদযাপন হয়ে আসছে। হিজরী রজব মাসের প্রথম দিন থেকে মেলা শুরু হয়ে প্রায় মাসব্যাপী চলে এর কার্যক্রম। পূর্ণিমার রাতে হয় বড় মেলা।
তবে মানতকারী ভক্ত দর্শনার্থীদের আনাগোনা থাকে সারা মাস। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার-হাজার লোকজন ব্র্যান্ডপার্টিসহ মানত করা মোরগ, খাঁসি, গরুসহ নানা পণ্যসামগ্রী নিয়ে লালমাটির পাহাড়ী অঞ্চল দাড়িয়াপুরকে এক মিলন কেন্দ্রে পরিণত করে।
মাজারের চারপাশের প্রায় এক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লোকজন মোরগ, গরু-খাঁসি জবাই করে মানত পূরণ করে।
তবে অভিযোগ রয়েছে, মাজার ঘেঁষেই পাগল ভক্তদের বসার আস্তানা। সেখানে প্রকাশ্যে গাঁজা সেবন করা হয়। এই সুযোগে দূরদূরান্ত থেকে আসা যুবকেরা অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদক গ্রহণ করে। এ ছাড়া মেলাকে কেন্দ্র করে অশ্লীল নৃত্যের আয়োজন করা হয় বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ দিকে মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি কবির হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মেলা চলছিল কোন অদৃশ্য শক্তি মেলাটি বন্ধের পেছনে কাজ করেছে। রয়েছে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। মেলায় কোনো অশ্লীল নৃত্য ও অবৈধ কিছু চলেনি।
এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল্লাহ আল রনি জানান, মেলার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ ছিল। আমরা অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছি। এ কারণে মেলাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
টা/প্র/অ (১২ জানুয়ারি)।
