10:22 pm, January 19, 2025

অতিরিক্ত ডিআইজি জেসমিন ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

প্রবাহ ডেস্ক :

ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ্যভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন ২০ তম বিসিএস ক্যাডার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জেসমিন বেগম এবং তার স্বামী পরিসংখ্যান ব্যুরো অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো.শামিমুজ্জামান। পতিত সৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।

পতিত সরকারের সময় স্বামী ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব,বর্তমানে পরিসংখ্যান বুরো অধিদপ্তরে কর্মরত। স্ত্রী জেসমিন বেগম ছিলেন অতিরিক্ত ডিআইজি (টি,আর) ঢাকা, বর্তমানে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে (ওএসডি) হিসেবে সংযুক্ত আছেন।

গত (৫ আগষ্ট) হাসিনা সরকারের পতন হলে তাকে (ওএসডি) করে সিলেট রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চাকুরী জীবনের শুরুতে ঢাকা শহরে মাথাগোজার ঠাই না থাকলেও মাত্র কয়েক বছরে এখন তারা শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তাদের ঘুষ দূর্নীতি ও প্রতারণা থেকে রক্ষা পাননি নিকট আত্বীয়স্বজনও।

গত (৯ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে প্রধাণ উপদেষ্টার কার্যালয়ে,দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুলিশের  আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতারণার স্বীকার ব্যবসায়ী এ এস এম জুলফিকার হায়দার।

অভিযোগটি (এসএ-৭৫৩) স্মারকে জমা করেন পুলিশ হেডকোর্টার্স ঢাকার আইজিপির কমপ্লেইন মনিটরিং সেল। এরপর অভিযোগটি তদন্তের জন্য প্রেরণ করেন সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যলয়ে। অভিযোগের স্বপক্ষে স্বাক্ষ্য প্রদানের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (আইঅ্যান্ডসিএম) নাছির উদ্দিন আহমেদ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য অভিযোগকারীকে গত (৫ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদানের প্রেক্ষিতে অভিযোগ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি লিখিত বক্তব্য প্রদান করেন। 

লিখিত বক্তব্যে এবং জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি জানান,অতিরিক্ত ডিআইজি জেসমিন বেগম এর সাথে তার পারিবারিক সুসম্পর্ক থাকার সুবাদে ঐ কর্মকর্তা তাকে আনন্দ হাউজিং সোসাইটিতে ১২ কাঠার একটি প্লট পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে (২০০৭) সনের ১৫ নভেম্বর তার স্বামী শামিমুজ্জামান নগদ ২ লাখ টাকা ঘুষ বাবদ এবং জমির মূল্য বাবদ উত্তরা ব্যাংক থেকে ৮ লক্ষ টাকার আনন্দ হাউজিংয়ের নামে একটি পে-অর্ডার যা জেসমিন বেগম এর হাতে তিনি প্রদান করেন মর্মে জানান।

কিন্তু পরবর্তিতে ঐ প্লটটি তাকে বুঝিয়ে না দিয়ে তারা টালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে ঐ বছরেই জেসমিন বেগম মিশনে যাবার সময় বাদীকে প্রতিশ্রতি দিয়ে যান মিশন থেকে ফিরে ৬ কাঠা জমির মূল্য বাবদ তিনি ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করবেন এবং বাকি ৬ কাঠা জমি তিনি বাদীকে বুঝিয়ে দিবেন।

কিন্ত মিশন থেকে ফিরে এসে বাদীকে কোন টাকা পয়সা না দিয়ে উল্টো পুরো ১২ কাঠা জমি তিনি নিজের নামে বরাদ্ধ নেন। পরবর্তিতে সৈরাচার সরকারের পতন হলে বাদি নিরুপায় হয়ে ২০২৪ সালে ২০ অক্টোবর জেসমিন বেগম এর নামে একটি লিগ্যাল উকিল নোটিশ প্রেরণ করেন। এরপর দু-দফা আলোচনায় বসে সমাধানের আশ্বাস দিয়েও তার কোন সমাধান করেননি জেসমিন বেগম।

যার কথোপকথন এর ভয়েজ রেকর্ড তিনি স্বাক্ষ্য হিসেব তদন্ত কর্মকতার কাছে জমা প্রদান করেছেন। এ ছাড়াও তাদের নামে ঢাকার সেগুনবাগিচায় তানাকা টাওয়ারের ৬ তলায় ১৮২৫ বর্গফুটের গ্যারেজসহ একটি ফ্লাট রয়েছে যার মূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। কলাপাড়ায় পোর্ট এড়িয়ায় ৪ একর জমি রয়েছে যার বাজার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা।

কেরানীগঞ্জের নিউ ভিশন ইকো সিটিতে ৬ কাঠার একটি প্লট রয়েছে যার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। সৈরাচার হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে পূর্বাচল ৩০০ ফিট এর পাশে বসুন্ধরা কনভেনশন হল সংলগ্ন পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটিতে ৪ কাঠার একটি প্লট পেয়ে যান। যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৪ কোটি টাকা। এ ভাবে নামে বেনামে তাদের  শতকোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলে দুদক এর কাছে অভিযোগে জানান ঐ ব্যবসায়ী।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জেসমিন বেগম এর মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি মুশফেকুর রহমান জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে।  উভয় পক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে রির্পোট প্রদান করা হবে।

- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ
- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরো খবর

- Advertisement -spot_img