1:30 am, December 24, 2024

খানসামায় সাদা রসুনে আর হলুদ দুঃখ নেই

তীব্র শীত ও টানা শৈত্যপ্রবাহের কারণে সাদা সোনাখ্যাত রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার রসুনচাষিরা। তবে কয়েকদিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আশানুরূপ ফলন ও মূল্য পাবেন বলে আশাবাদী এখন তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে, যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। 

উপজেলার গোয়ালডিহি, দুবলিয়া, হাসিমপুর, নলবাড়ি, ভাবকী, কাচিনীয়া, গুলিয়ারা, আগ্রা, উত্তমপাড়া ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রসুনের আবাদ হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ আগে জেঁকে বসা প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় রসুনগাছের পাতা হলুদ রং ধারণ করে বিবর্ণ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েন চাষিরা। এখন আবহাওয়া ভালো হওয়ায় ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাদা সোনাখ্যাত রসুন নিয়ে আশার আলো দেখছেন চাষিরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর রসুনে সাফল্যের আশা করছে কৃষি বিভাগ। 

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রসুন চাষে জমি প্রস্তুত, বীজ, হাল, পরিচর্যা, সার ও সেচ মিলে বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে অন্তত ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। বীজের মূল্য বেশি থাকায় রসুন চাষে এ বছর খরচও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। 

তারা আরো জানান, বিঘাপ্রতি ফলন হবে অন্তত ৫৫ থেকে ৬০ মণ। প্রতি মণ রসুনের বর্তমান বাজারদর ৭-৮ হাজার টাকা। এতে খরচ বেশি হলেও লাভের আশা করছেন চাষিরা।

উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের জমিরশাহ পাড়ার রসুনচাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন পূর্বে তীব্র শীতে রসুনগাছের পাতার রঙ এমন পরিবর্তন হয়ে গিয়েছিল যে দূর থেকে দেখলে মনে হতো সরিষাক্ষেত। তবে কিছুদিন থেকে আবহাওয়া ভালো হওয়ায় এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক স্প্রে ও পরিচর্যা করায় রসুনক্ষেতের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমি এ বছর ১ বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর রসুনের দামও বেশি।

খামারপাড়া ইউনিয়নের রসুনচাষি মাহফুজ আলম বলেন, আমি এ বছর দেড় বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। তীব্র ঠান্ডা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুনক্ষেত নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকলেও এখন তা ঠিক হয়ে গেছে। রসুনের ফলন ও দাম ভালো পাবো বলে আশা করছি। 

খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বদা কৃষকদের কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী রসুনসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি কৃষকরা এ বছর রসুনে সফলতা পাবেন।

খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হাবিবা আক্তার বলেন, কিছুদিন পূর্বে শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুনক্ষেত হলুদ বর্ণ ধারণ করেছিল। এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে গেছে। আশা করছি রসুনের ফলনও ভালো হবে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সচেতন করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। প্রয়োজনে কৃষকদের কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। 

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ
- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরো খবর

- Advertisement -spot_img