প্রবাহ ডেস্ক :
টাঙ্গাইল সদর উপজেলায় এক ইউপি সদস্যের নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ দুই ছেলে।
গত শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেলে দাইন্যা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বড় বিন্যাফৈর গ্রামে হামলার ঘটনাটি ঘটে।
ওই দিন বিকেলে বড় বিন্যাফৈর ঈদ গাঁ মাঠ জামে মসজিদে সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধে কমিটি গঠণ নিয়ে প্রতিবাদ করায় হামলার শিকার হন বৃদ্ধ, বৃদ্ধাসহ দুই ছেলে।
পরে ৯৯৯ এ খবর দিলে পরে পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে।
আহতরা বর্তমানে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
হামলার ঘটনায় (২৯ জুন) ৬ জনের নাম উল্লেখ করে টাঙ্গাইল সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত মুন্নাফ আলী।
আহতরা হলেন- বৃদ্ধ কোরবান আলী (৬৫), বৃদ্ধা মনোয়ারা বেগম (৫২), মো. মুন্নাফ আলী (৩৫) ও মো. আশরাফুল (২০)।
হামলার অভিযুক্তরা হলেন, বড় বিন্যাফৈর গ্রামের আনছার আলীর ছেলে বিন্যাফৈর স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান (৫৫), ইউপি সদস্য আশরাফ (৫০), মসজিদের ঈমাম আসাদুর মুন্সী (৪৫), আনোয়ার (৬০), ইউপি সদস্য আশরাফ এর ছেলে মো. আরাফাত (২০) ও আতিক (২৫)।
এ বিষয়ে আহত মো. মুন্নাফ আলী জানায়, আমাদের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ এর দুই ছেলে চুরি ও মাদক সেবনে জড়িত।
ইতোপূর্বে আমার মোবাইল চুরি ও স্থানীয় মিয়া চাঁনের বাড়িতে ২০ হাজার টাকা চুরির সময় ধরা পরেছে তারা।
তাদের নিয়েই ওই দিন মসজিদে মুসুল্লী বৃদ্ধি আর সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধ কমিটি গঠণের করার প্রস্তাব হয়।
এ সময় আমি চুরির ঘটনায় জড়িত ছেলেদের ও ঈমাম সাহেবের কোন বিচার করতে না পারার যুক্তি তুলে আমিসহ অসংখ্য মুসুল্লী কমিটি গঠণের বিরোধীতা করি।
পরে বিরোধীতা করার কারণে ওই ইউপি সদস্যসহ তার পরিবারের লোকজন আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হন।
পরে এর জের ধরে আমি ও আমার ছোট ভাইকে তাদের বাড়ির ভিতর আটকে অমানবিক নির্যাতন চালায়।
তার ভাই বিন্যাফৈর স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান আমাকে ইট দিয়ে মারতে আসেন, মসজিদের ঈমাম আসাদুর মুন্সি লাঠি ও লোহার রড দিয়ে আমাকে মারধর করেন।
আমাদের উপর ওই নির্মম অত্যাচারের খবর পেয়ে আমার বৃদ্ধ বাবা ও মা এগিয়ে এলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তারা তাদেরও নির্মম ভাবে মারধর চালায়।
পরে স্থানীয়রা ৯৯৯ ফোন দিয়ে আমাদের উপর নির্যাতনের সংবাদ দেয়।
পরে পুলিশ এসে আমাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুসুল্লী বৃদ্ধি আর সামাজিক অবক্ষয় প্রতিরোধ কমিটি গঠণের সভায় উপস্থিত কয়েকজন মুসুল্লী বলেন, কমিটি গঠণ নিয়ে আমাদের শুরু থেকেই আপত্তি ছিল।
ওইদিনও আমরা আপত্তি করেছি। ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে হামলা চালানো ঠিক হয়নি।
আমরা হামলার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানচ্ছি।
এ বিষয়ে দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আশরাফ এই নির্যাতন চালানোর কথা স্বীকার করেন।
এ দিকে দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আফজাল হোসেন বলেন, সামাজিক বিরোধ থেকে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
তবে ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। উভয় পক্ষকে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মিমাংসার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানা তিনি।
এ প্রসঙ্গে, টাঙ্গাইল সদর থানার (পুলিশ) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ অভিযোগ করেছেন। আমরা তদন্ত করছি।
এরপরও হামলায় ক্ষতিগ্রস্থদের সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখছি। দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ দোষীদের গ্রেফতার করা হবে।
টা/প্র/অ