10:37 pm, December 24, 2024

ফারুক হত্যাকান্ডে জামিন পেলেন টাঙ্গাইলের সাবেক পৌর মেয়র মুক্তি

প্রবাহ ডেস্ক :

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি বুধবার জামিনে মুক্তি লাভ করেছেন।

বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে জামিনের পর তিনি বিকেলে টাঙ্গাইল কারাগার থেকে বের হয়ে যান।

আদালত সূত্রে, ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে বন্দি সহিদুর রহমান মুক্তির জামিনের জন্য তার আইনজীবীরা টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন।

তারা জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তি কারাগারে খুব অসুস্থ অবস্থায় আছেন।

তার অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। থারাওয়েডের সমস্যাসহ আরো অনেক রোগে ভুগছেন।

সুচিকিৎসা না পেলে তার মৃত্যু হতে পারে। যে কোন শর্তে মুক্তির জামিন চান আইনজীবীরা।

পরে ওই আদালতের বিচারক মোঃ মাহমুদুল হাসান শুনানি শেষে সহিদুর রহমান খান মুক্তির মামলার আগামী ধার্য তারিখ (২২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

আগামী ধার্য তারিখে কি কি চিকিৎসা গ্রহন করলেন তা আদালতকে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মনিরুল ইসলাম খান।

টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকলেছুর রহমান জানান, সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন মঞ্জুরের কাগজপত্র বিকেল তিন টার দিকে কারাগারে আসে।

পরে সাড়ে তিন টার দিকে তিনি কারাগার থেকে বের হয়ে যান।

সহিদুর রহমান খান মুক্তির বাবা আতাউর রহমান খান ও মুক্তির ভাই আমানুর রহমান খান রানা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য।

এ মামলায় মুক্তির অপর তিন ভাইও আসামী।

সহিদুর রহমান খান মুক্তির পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ঢাকায় চিকিৎসা গ্রহনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেছেন। সেখানে কোন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহন করবেন।

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বের হয়ে আসে। তারপর সহিদুর রহমান খান মুক্তি আত্মগোপন করেন।

দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকার পর ২০২০ সালের (২ ডিসেম্বর) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

পরে আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে পাঠান।

পরে ২০২২ সালে (১০ ফেব্রুয়ারি) তিনি জামিন পেয়েছিলেন।

পরে আদালত জামিত বাতিল করার পর (২৮ ফেব্রুয়ারি) আবার কারাগারে পাঠায়। এরপর ২০২৩ সালের ২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারাগার থেকে মুক্ত হন।

পরে আদালত তার জামিন বাতিল করলে পরদিনই আদালতে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে যান। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের (১৮ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজ পাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদি হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এ হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

আদালতে এ দুজনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে এই হত্যার সাথে তৎকালিন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা এবং তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা জড়িত বলে বের হয়ে আসে।

২০১৬ সালের (৩ ফেব্রুয়ারি) তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এতে সহিদুর হমান খান মুক্তির চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

অতিরিক্ত সরকারি কৌশলী মনিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন মামলাটির শুধু তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। অন্য সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

টা/প্র/অন্তু

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ
- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরো খবর

- Advertisement -spot_img