প্রবাহ ডেস্ক :
হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সারাদেশেই মামলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে মামলার সংখ্যা দেড়শ পার হয়েছে।
এ সব মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক মন্ত্রী, দলের নেতা এবং তাদের সহযোগীদের আসামি করা হচ্ছে। এবার একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হলো সদ্য বিলুপ্ত জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেও। সঙ্গে আসামি হয়েছেন তার স্ত্রী শেরিফা কাদেরও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মাহমুদুল হাসান জয় নামে ১৪ বছরের এক কিশোর নিহতের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে একটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় শেখ হাসিনা, জিএম কাদেরসহ ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত কিশোরের পূর্বপরিচিত দাবিকারী রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার সাত মসজিদ হাউজিংয়ের বাসিন্দা মো. রবিউল আউয়াল এই মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি যাত্রাবাড়ী থানাকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন— শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, পুলিশের সাবেক যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. হাসান মাহমুদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জোনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, হামিম গ্রুপের স্বত্বাধিকারী ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী এনামুল হক শামীম, জিএম কাদের স্ত্রী শেরিফা কাদের, সুজন হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আতিকুল রহমান ভুঁইয়া, যুবলীগ নেতা মনির হোসেন, তারেক খালদুন বিন আরিফ, তাজরিন হোসেন, ইঞ্জি. রবিউল আলম, হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া ওরফে হাবু, রফিকুল ইসলাম শান্ত, সাইদুর রহমান বাবুল, আবু বকর, মমিন, শাহজালাল, আবুল কালাম আজাদ, আকবর হোসেন, চিত্তরঞ্জন দাস, নজরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম রফিক ও মো. আফজাল হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৪ বছরের কিশোর মাহমুদুল হাসান জয় একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। গত ৫ আগস্ট সে ছাত্র আন্দোলনের ডাকা মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে যোগ দেয়। ওই দিন সকাল ১১টায় যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছালে অন্যান্যদের সঙ্গে মাহমুদুল হাসান জয়ও গুলিবিদ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে অনেকে জাতীয় পার্টিকেও দায়ী করছেন। তারা বলছেন, পরপর তিনটি ভুয়া নির্বাচন করতে সহযোগিতা করেছে জাতীয় পার্টি। তবে দলটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই অভিযোগ নাকচ করা হয়েছে। জিএম কাদের দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগ তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করেছে।
গত নির্বাচনে তিনি যেতে চাননি। গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে বল প্রয়োগ করে তাকে ভোটে নেওয়া হয়েছে।