প্রবাহ ডেস্ক :
আগে ফ্লাইট থেকে বিমানবন্দরে নেমে ইমিগ্রেশনে লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হতো। এরপর লাগেজের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা।
কিন্তু এখন দেখি বিমানবন্দরের চিত্র পুরোই বদলে গেছে। ফ্লাইট অবতরণের অল্প সময়ের মধ্যেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হচ্ছে। বেল্টে যাওয়ার আগেই লাগেজ পৌঁছে যাচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফ্রিতে টেলিফোনে কথা বলতে পারছি। স্মার্টফোন ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্য ওয়াইফাই সংযোগও ফ্রি।
আর বিমানবন্দরে কর্মরত সবাই প্রবাসীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথাও বলছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর সামনে এসব কথা বলেন সৌদি প্রবাসী আক্তার হোসেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে।
আক্তার হোসেন বলেন, ‘চাকরির সুবাদে দীর্ঘ ১০ বছর জেদ্দায় থাকি। প্রতি বছরই ছুটিতে দেশে আসি। সব সময়ই লাগেজ পেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
অনেক সময় লাগেজ ভেঙে ফেলা হয়েছে। মালামাল চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এবার যাত্রীদের তেমন কোনো ভোগান্তি নেই। এমনকি ইমিগ্রেশন পুলিশের যেসব সদস্য আগে গোমড়া মুখ করে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতেন, এখন তাদের ব্যবহার খুবই আন্তরিক।
শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্রে, গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শাহজালাল বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তাদের রদবদল হয়। মূলত তখন থেকেই বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা বাড়তে থাকে। এখন এই ধারা অব্যাহত রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া।
জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘গত আগস্ট থেকে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যে পরিবর্তন লেগেছে, তা যেন অব্যাহত থাকে। সে জন্য প্রায় প্রতিদিনই বিমানবন্দর পরির্দশন করি।
বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলি, যাতে তারা যাত্রীদের পর্যাপ্ত সেবা দেন।
শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে ২০২৩ সালের ২৭ জুলাই হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কল সেন্টার উদ্বোধন করা হয়।
এখন দেশের যে কেউ কল সেন্টারে (০৯৬১৪-০১৩৬০০) যোগাযোগ করে সেবা নিতে পারছেন।
এ ছাড়া যাত্রীসেবা বাড়াতে একই দিন একটি ওয়েব পোর্টাল চালু করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
এ কল সেন্টারে বিমানবন্দর-সংক্রান্ত যে কোনো তথ্য জানা যায়।
এখন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মিনালে দিনে ৩০টির বেশি উড়োজাহাজ সংস্থার ১২০-১৩০টি প্লেন উড্ডয়ন ও অবতরণ করে।
প্রতিদিন এসব উড়োজাহাজের প্রায় ২০ হাজার যাত্রী বিমানবন্দরের দুটি টার্মিনাল ব্যবহার করেন।
এ হিসাবে বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রীর সেবা দেওয়ার সুযোগ আছে।
তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে আরও ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বেবিচক।