প্রবাহ ডেস্ক :
‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের মতোই ঠিকানাটা আজ আকাশেই। তবে সেই ঠিকানায় পৌঁছায় না ভালোবাসার খোলা চিঠি, আবেগের উষ্ণতা। না পৌঁছাক ভালোবাসা, না করা যাক স্পর্শ, তাতে কি? হৃদয় জুড়ে তো আছে স্মৃতির সবটুকুই।
তাইতো চলে যাওয়ার ২৭ বছর পরও এখনো কোটি ভক্তহৃদয়ে তিনিই সেরা। তিনি ক্ষণজন্ম অমর নায়ক সালমান শাহ।
বাংলা সিনেমার সর্বকালের সেরা স্টাইলিস্ট ও ফ্যাশনেবল আইকন হিরো সালমান শাহর জন্মদিন আজ। বেঁচে থাকলে এবারে তিনি ৫৩ বছরে পা রাখতেন। তিনি আমাদের মাঝে না থাকলেও একবিন্দু কমেনি তার জনপ্রিয়তা ও আবেদন। বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম রঙিন হয়েছে তাকে নিয়ে ভালোবাসার রং।
দেশজুড়ে যখন যুদ্ধ চলছে, স্বাধীনতার জন্য যখন বাঙালি লড়ছে প্রাণপণে; সে সময় জন্ম নিলেন সালমান শাহ। ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। স্বাধীন দেশে নতুন সুর্য এলো তার জন্মের কয়েক মাস পরই। সেই নতুন সুর্যের মতো সালমান শাহও দেশের চলচ্চিত্রে নিয়ে এলেন নতুন কিছু। যা তার মৃত্যুর দুই যুগ পরেও এখনো নতুন!
তিনি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে এসে ছিলেন স্বল্পদৈর্ঘ্য জীবন নিয়ে। মাত্র চার বছরে কাজ করেছেন ২৭টি সিনেমায়। যার সবগুলোই ব্যবসাসফল, সেই সাথে তুমুল জনপ্রিয়। চার বছরের ছোট্ট জীবনে বদলে দিয়েছেন বাংলা চলচ্চিত্রের দৃশ্যপট। পোশাকে আধুনিকতা আর অভিনয় নৈপুণ্যে নিজেকে নিয়ে গেছেন সেরা তারকার কাতারে।
গায়ক হিসেবেও সালমানের পরিচিতি ছিল। ছোটবেলা থেকেই শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি দারুণ আগ্রহ ছিল তার। বন্ধুমহলে সবাই তাকে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে চিনতেন। ১৯৮৬ সালে ছায়ানট থেকে পল্লী গীতিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি।
রূপালি পর্দায় সালমান সাম্রাজ্যের সূচনা হয় নব্বই দশকের শুরুর দিকে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মধ্য দিয়ে। তার পরের গল্প অজানা নয়।
সালমান শাহ অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হচ্ছে– ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘দেন মোহর’, ‘তোমাকে চাই’, ‘বিক্ষোভ’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘বিচার হবে’, ‘জীবন সংসার’, ‘মহা মিলন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘প্রেমযুদ্ধ’, ‘সত্যের মৃত্যু নাই’, ‘সুজন সাথী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘তুমি আমার’, ‘বুকের ভেতর আগুন’, ‘প্রেম পিয়াসী’ প্রভৃতি। খুব অল্পদিনের ক্যারিয়ার তার। অথচ সেই অল্পদিনেই তিনি জয় করে নিয়েছিলেন কোটি কোটি দর্শকের মন।
১৯৯৬ সালের (৬ আগস্ট) বাংলা চলচ্চিত্রে বড় শূন্যতা তৈরি করে বিদায় নেন চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে (সালমান শাহ)। চলে যাওয়ার ২৫ বছর পার হলেও আজও খুলেনি তার মৃত্যু রহস্য। চলে গেছেন দৃষ্টি সীমার বাহিরে। তবে যেতে পারেননি মনের আড়ালে। তাইতো ভক্তদের প্রেমে অপ্রেমে এখনো আছেন প্রিয় সালমান। থাকবে অনন্তকাল।
টা/প্র/অ/১৯.০৯.২৪