1:28 am, December 24, 2024

টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যাকাণ্ড, খান পরিবারের চার ভাইদের পরিকল্পনা ও নির্দেশে

প্রবাহ ডেস্ক :

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ সোমবার (১১ নভেম্বর ) সাক্ষ্য দিয়েছেন।

তিনি আদালতকে বলেছেন, গ্রেপ্তার করা দুই আসামির ও প্রত্যক্ষদর্শী তিন সাক্ষীর আদালতে দেওয়া জবানবন্দি ও অন্যান্য আলামত থেকে সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণ হয় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর ভাইদের পরিকল্পনা ও নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে বহুল আলোচিত এই হত্যা মামলার সাক্ষীর পর্ব শেষ হলো।

টাঙ্গাইলের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এস আকবর খান বলেন, এখন বাদী ও আসামি উভয় পক্ষের যুক্তিতর্কের পর মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর তিন ভাই এই মামলার আসামি।

এ বিষয়ে মামলার সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ বলেন, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহমুদুল হাসানের আদালতে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ চলে।

পরে আধা ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবার বেলা তিনটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষ্যদানের সময় তিনি আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের (১৫ জানুয়ারি) তিনি মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান।

তদন্তকালে বিভিন্ন উৎস থেকে জানতে পারেন, এই হত্যাকান্ডে টাঙ্গাইল পৌর শহরের কলেজ পাড়ার আনিসুল ইসলাম (ওরফে) রাজা ও মোহাম্মদ আলী জড়িত থাকতে পারেন। তাঁদের গ্রেপ্তার করলে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে এই হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন তারা। পরে তাঁরা আদালতে জবানবন্দি দেন।

তাঁদের জবানবন্দিতে টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তাঁর ভাই সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার পরিকল্পনা ও নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড হওয়ার বিষয়টি বের হয়ে আসে।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আবদুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। তাঁদের জবানবন্দিতেও হত্যার বর্ণনা উঠে আসে।

অশোক কুমার সিংহ সাক্ষ্য দেওয়ার পর আসামিদের আইনজীবীরা তাঁকে জেরা করেন। এর আগে মামলার তদন্তের শেষ পর্যায়ে অশোক কুমার সিংহ পদোন্নতি পেয়ে বদলি হয়ে যান।

পরে গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফীজুর রহমান ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আমানুররা চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

২০১৭ সালের (৬ সেপ্টেম্বর) আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বাদীপক্ষের অভিযোগ, মামলার ২৬ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ হয় অনেক আগেই।

কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ এলেই কারাগারে থাকা আসামিরা অসুস্থতাসহ নানা অজুহাতে আদালতে আসতেন না। তাঁদের সময়ক্ষেপণের কারণে বিচারের প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছিল।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের (১৮ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর পৌর শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

পরে ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর ভাইদের নাম বের হয়ে আসে।

টা/প্র/অন্তু/(১২/১১/২০২৪)।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
সর্বশেষ
- Advertisement -spot_img

এই বিভাগের আরো খবর

- Advertisement -spot_img