প্রবাহ ডেস্ক :
স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কে না চাই। সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে করতে হয় পরিশ্রম। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দিলুর কথা বলছিলাম।
স্নাতক পড়া অবস্থায় বন্ধুদের সাথে নিয়ে বায়িং হাউজের ব্যবসা শুরু করেন। পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করেন। পাশাপাশি গড়ে তোলেন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। করোনার আগে ব্যবসার পাশাপাশি নিজ জমিতে ফলের বাগান শুরু করেন। করোনার কারণে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হলেও ফল বাগানে মনোনিবেশ করেন। স্বপ্ন গুণতে শুরু করেন কি ভাবে ফলের বাগান বৃদ্ধি করা যায়।
প্রথমে অল্প জমিতে ফলের বাগান শুরু করলেও এখন তা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৬ একর জমিতে। নিজের ফলের বাগানের নাম দিয়েছেন দিলু এগ্রাে ফার্ম।চায়না কমলা আবাদ করে বর্তমানে সাফল্যের মুখ দেখেছেন তিনি।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন দিলু।
সরেজমিনে, বাগানে চায়না কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। কমলা গুলো গাছে গাছে ঝুলছে। এ যেনো চোখের তৃপ্তি। ১৪০টি চায়না কমলা গাছে কমলা ধরেছে থোকায় থোকায়। অনেকেই কমলার সাথে তুলছেন ছবি।
প্রতিটি গাছে ২০ থেকে ৪০ কেজি কমলা তোলা যাচ্ছে।বিভিন্ন স্থান থেকে কমলার গাছ দেখতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। বাগান দেখে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেকে।
এ বিষয়ে কমলা চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রথমে ব্যবসার পাশাপাশি অল্প পরিসরে ফলের বাগান শুর করি। করোনার সময় ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তারপর থেকে ফলের বাগানে মনোযোগ দেয়।
পরে নিজ জমিতে শুরু করি ফলের বাগান। নিজের ফলের বাগানের নাম দেয় দিলু এগ্রো ফার্ম। আমার বাগানটি আসলে মিশ্র ফল। আমার বাগানের মুল আকর্ষণ চায়না কমলা।প্রায় সাড়ে ৬ একর জমিতে রয়েছে ফলের বাগান।
২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে অল্প পরিসরে চায়না কমলা গাছের চারা রোপন করি। সঠিক পরিচর্যা করার ফলে ২০২২ সালে গাছে চায়না কমলা আসতে শুরু করে। চায়না কমলা আবাদে বছরে সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করছি। খরচ বাদে তিন বছরে চায়না কমলা থেকে আয় করছি সাড়ে ৯ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, আমার বাগান প্রতিনিয়ত চারজন শ্রমিক কাজ করেন। তাদের জন প্রতি ৪৫০ টাকা দিতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন কমলার বাগান দেখতে। আমার বাগানের কমলা খুবই সুস্বাদু। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। ১৪০টি কমলা গাছ থেকে ২০ থেকে ৪০ কেজি কমলা তুলতে পারবো। প্রতি কেজি কমলা ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কালিয়াকৈর চন্দ্রা থেকে কমলা বাগান দেখতে আসা রিপন মাহমুদ বলেন, আমি কমলা বাগানটি দেখার জন্য এসেছি। ভবিষ্যৎতে আমি ও যেন উদ্যােক্তা হতে পারি সেই আশা নিয়েই এখানে আসছি।দেলোয়ার ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি দেলোয়ার ভাইয়ের সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম। প্রত্যকটি এলাকায় এরকম নতুন নতুন ফলের আবাদ যদি আমরা করতে পারি। তা হলে আমরা দ্রুতই স্বাবলম্বী হবো।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন জানান, আমরা কমলা চাষি দেলোয়ার হোসেনের কমলা বাগান দেখেছি। এই বাগানে ১৪০টি চায়না কমলা গাছ রয়েছে। এই বাগানটি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ও পরামর্শগত সহায়তা প্রদান করেছি।
এখানে যিনি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার তিনি চাষি দেলোয়ারকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন। কমলা গাছে কখন কি প্রয়োগ করতে হবে সব সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সহযোগিতা করেছেন।
তিন বছরে অনেক ভালো ফলন এসেছে। আশা করছি সামনে আরও ফলন বাড়বে। কৃষক ভাইরা যারা বাগান করতে আগ্রহী তারা এই বাগানটি দেখে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি আহবান জানাবো এই এলাকায় যারা কৃষক রয়েছেন এসে এই বাগানটি দেখে যান। আমি চাই এই এলাকায় আরও বাগান হোক।
টা/প্র/অন্তু/(২৭ নভেম্বর)।