প্রবাহ ডেস্ক :
টাঙ্গাইলে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল সানতু জানান, আসামিদের টাঙ্গাইল সদর ও রংপুর কোতায়ালী থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক, নকল প্রবেশপত্র, স্বাক্ষরিত ফাঁকা রাজস্ব স্টাম্প ও সিপিইউসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা- টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার শ্রীহরিপুর গ্রামের ছবুর উদ্দিনের ছেলে এস এম আয়াত (১৯), সদর উপজেলার বাগবাড়ীর গ্রামের জাফর আলীর ছেলে মো. জিহাদ (১৯), কালিকৈটাল গ্রামের জুব্বার সিকদারের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ (২০), রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার গন্ধবপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে মেহেদী হাসান (২৫), দোড়াকান্দর গ্রামের দ্বীপক চন্দ্রের ছেলে হিমান্ত চন্দ্র রায় আপন (১৯) ও বড়আমবাড়ী গ্রামের ওবায়দুল ইসলামের ছেলে তুহিন মিয়া (২১)।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার সাইফুল সানতু সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২০ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থী এস এম আয়াত, মো. জিহাদ ও মো. আব্দুল্লাহর লিখিত পরীক্ষায় খাতায় প্রাপ্ত নম্বর এবং তার মৌখিক পরীক্ষায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে অসঙ্গতি ও তারতম্য পরিলক্ষিত হওয়ায় নিয়োগ বোর্ড তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
এক পর্যায়ের প্রার্থীগণ স্বীকার করে যে, গত (১৩ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় নিজেরা অংশগ্রহণ না করে অসৎপন্থা অবলম্বন করে অসাধুভাবে অন্য ব্যক্তিদের উক্ত লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়েছিলেন।
পরে পুলিশ বাদি হয়ে ২০ নভেম্বর সদর থানায় মামলা দায়ের করে। তাদের গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই রিমান্ডে নেওয়া হয় সদর থানায়।
গত (২৫ নভেম্বর) মামলাটি আদালত থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি দক্ষিণ) হস্তান্তর করা হয়।
পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পুলিশের তাদের আরও দুই দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মেহেদী হাসান, হিমান্ত চন্দ্র রায় আপন ও বড় আমবাড়ী গ্রামের ওবায়দুল ইসলামের ছেলে তুহিন মিয়াকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ সুপার জানান, আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাংলাদেশ পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পরীক্ষায়সহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় দেশের বিভিন্ন জেলায় চক্রবদ্ধভাবে জালিয়াতির সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে নিজেদের দোষ স্বীকার করেছে। জালিয়াতিতে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তার করার লক্ষে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, আসামিদের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রার্থীর নকল প্রবেশপত্র- ৬০টি, ছবি- ৩২টি, বিভিন্ন নম্বর সম্বলিত এবং স্বাক্ষরিত ফাঁকা রাজস্ব স্ট্যাম্প- ৭০টি, বিভিন্ন ব্যাংকের স্বাক্ষরিত ফাঁকা চেক- ৯টি, মোবাইল ফোন- ৭টি, কম্পিউটার পিসি- ১টি, হিসাবের ডায়রি- ১টি, স্ট্যাম্প প্যাড- ১টি, সিল- ২টিসহ ব্যাগ ২টি এবং ৩টি কভার ফাইল উদ্ধার করা হয়েছে।
টা/প্র/অন্তু (২৮ নভেম্বর)।