প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতা যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরাধও কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ভাবে হচ্ছে। নতুন নতুন মাত্রায় অপরাধ দেখা দিচ্ছে। কাজেই এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে পুলিশ বাহিনীকেও সেভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। এই জন্য সরকার তাদের পাশে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ভাষণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। আমাদের শান্তি শৃঙ্খলা, জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছি। প্রতিবার ইশতেহার বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। ২০০৯ সালের সরকার গঠনের পর থেকে আমরা সরকারে আছি, একটা স্থিতিশীল পরিবেশ, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকের বাংলাদেশ, বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।
সরকার প্রধান আরো বলেন, ‘আমাদের পুলিশ বাহিনী এখন মানুষের বন্ধু হিসেবে কাজ করছে।’ আজকাল মানুষ আর আগের মতো পুলিশকে ভয় পায় না। এখন তারা আস্থা ফিরে পেয়েছে। পুলিশকে নিজের বন্ধু এবং আস্থার জায়গা হিসেবে সাধারণ মানুষ বিবেচনা করে। মানুষের জন্য কাজ করে আপনারা মানুষের হৃদয়ে একটা স্থান করে নিয়েছেন। মানুষের সেই আস্থা ও বিশ্বাস সবচেয়ে বড় কথা। যে কোন কর্মস্থলেই হোক না কেন-সেখানে নারী, পুরুষ, শিশু যেই থাকুক তাদেরকে আপনজন হিসেবে বিবেচনা করেই তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সেবা করবেন এটাই সকলে চায়। এসময় তিনি নিজ নিজ কর্মস্থলে অধস্তনদের তাঁর এই নির্দেশনা জানানো এবং দেশের মানুষের পাশে থেকে তাদের সেবা করে যাওয়ার জন্য পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, এই যে আগুন দেওয়া, পুলিশকে মারা, পুলিশকে আগুনের মধ্যে ফেলে দেওয়া, এই ঘটনাগুলোর মামলাগুলো কিন্তু যথাযথভাবে চলে না। আমি মনে করি যারা এ ধরনের ক্রাইম করে তাদের মামলা এবং সাজাটা যদি দ্রুত হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন সাহস পাবে না। আগামীতে কেউ যেন আর এভাবে আক্রমণ করতে না পারে, পুলিশের ওপর হামলা করতে না পারে, রাজনীতির নামে, সন্ত্রাসের নামে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে না পারে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে না পারে, মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে, জাতীয় সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে, এসব ব্যাপারে পুলিশকে অবিচল থাকতে হবে। যখনই যেটা দরকার যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই জনগণের শান্তি শৃংখলা জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাই ও প্রতি মেয়াদে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা দেই এবং তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। যেহেতু ২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশে গণতান্ত্রিক ধারা বিরাজমান। পাশাপাশি পরিস্থিতিও সেভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। কাজেই আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ফিলিস্তিনের ওপর যে হামলা এবং গণহত্যা চলছে বাংলাদেশ কিন্তু এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমি প্রতিটি জায়গায় এর প্রতিবাদ করেছি। ফিলিস্তিনে নিরীহ নারী ও শিশুদের ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন ও গণহত্যা যে চলছে শুধু তাই নয় তাদের খাদ্য, চিকিৎসা-হাসপাতাল সবকিছুতে এমনকি যেখানে রিলিফ বিতরণ হয় সেখানেও আক্রমণ চালানো হচ্ছে। এর থেকে জঘন্য এবং মানবতা বিরোধি কাজ আর হতে পারে না। আর এর প্রভাবটা বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়ছে এবং আমাদের ওপরও কিন্তু সেই ধাক্কা আসছে। যদিও আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে এটা মোকাবেলা করার।