প্রবাহ ডেস্ক :
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় মায়ের নামে মুশুদ্দি রেজিয়া কলেজ স্থাপন করা হয় ২০১৫ সালে। মুশুদ্দি গ্রামে বৈরান নদীর প্রায় ২০০ একর জায়গা দখল করে সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
মুশুদ্দি গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ মাহাবুব বলেন, আমাদের মুশুদ্দি গ্রামের বৈরান নদীটি ছিল প্রবহমান। আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক মন্ত্রী ড. রাজ্জাক তার মায়ের নামে কলেজ করে নদীটি দখল করে রেখেছেন। বৈরান নদী ঝোপনা গ্রামের ত্রি-মোহনা হয়ে মুশুদ্দি সানদারবাড়ি, কামারপাড়া, কসাইবাড়ি, হাদিরা হয়ে গোপালপুর প্রবাহিত হয়েছিল।
নদীতে বাঁধ দিয়ে দখল করার কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে কাইলাচড়া বন্ধ, ফুলবাড়ি বন্ধ, চাটকি বিল, সুতারিপুড়ি বিল, কাহিলাপুড়ি বিল কয়ড়া হয়ে হাইক্কা বিলে পানি নামা বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পানি প্রবাহ বন্ধ থাকার কারণে মুশুদ্দি কামাড়পাড়া, বাইন্দাপাড়া, গোনাভাতকুড়া, ভাতকুড়া, ফুলবাড়ি, কয়ড়া, আটাপাড়া, চরপাড়া, চরধলি ও খাসপাড়া এলাকায় ২০ হাজারের বেশি কৃষক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নদী দখলের মতো হীন কাজটি সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও তার ভাই আবু কায়ছারের প্রত্যক্ষ মদদে হয়েছে। ঝোপনা থেকে দরিচন্দ্র বাড়ি বাঁধ দেওয়া প্রায় আধা কিলোমিটার নদী উদ্ধার করে স্বাভাবিক গতিপথ ফিরিয়ে আনার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
এ দিকে রাজ্জাকের ভাই মুশুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু কায়ছার বলিভদ্র এলাকায় শত-শত একর কৃষিজমি মাটি ভরাট করে দখলে নিয়েছেন। তিনি সেখানে কারখানা করবেন।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, কায়ছার চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর কাছ থেকে জমি কেনার কথা বলে জমি নিয়ে আর টাকা দেননি।
বলিভদ্র গ্রামের মতি মণ্ডল বলেন, আমার কৃষিজমি দখল করেছেন কায়ছার চেয়ারম্যান। তার মন্ত্রী ভাইয়ের প্রভাব খাটিয়েছেন। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাইনি।
এ বিষয়ে মোস্তফা নামেরে এক কৃষক বলেন, আমার সংসার চালাই কৃষিকাজ করে। আর সেই জমি কায়ছার চেয়ারম্যান দখল করে নিয়ে নিছে। আমরা তার বিরুদ্ধে মানববন্ধনও করেছি।
কিন্তু তার ভাই আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ছিলেন, এই কারণে তাদের ক্ষমতার সামনে আমরা টিকতে পারিনি। আমরা কিছুই পাই নাই। আমাকে টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটা টাকাও দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, আমরা গিয়ে দেখব কী অবস্থা। তারপর আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। অভিযোগের বিষয়ে তার ও তার ভাইয়ের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
টা/প্র/অ/(৫ অক্টোবর)।